দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের করাচির ল্যান্ডি জেলখানায় বন্দি রয়েছেন ৯ বাংলাদেশি।
এদের মধ্যে লক্ষ্মীপুরের দুইজন এবং নোয়াখালীর হাতিয়ার সাতজন রয়েছেন।
জানা গেছে, ওমান ও পাকিস্তান সীমান্তবর্তী সাগরে মাছ শিকার করতে যায়া তারা। এসময় তাদের মাছ শিকারে ব্যবহৃত নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে পাকিস্তানের জলসীমায় ঢুকে পড়লে দেশটির নৌ-বাহিনী তাদের আটক করে।
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মুক্তিতে বাধা নেই বলে পাকিস্তানের আদালত রায় দিলেও এখনো মুক্তি পাচ্ছেন না তারা।
আটককৃতদের পরিবারের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে যথাযথ কাগজপত্র না পৌঁছানোয় এখনও তাদের মুক্তি মিলছে না। কারাগারে আটক ব্যক্তিদের শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে বলে জানান স্বজনেরা।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন দেশের একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি বিষয়টি এই প্রথম শুনেছেন। তাঁর কাছে এমন কোন তথ্য নেই।
আটক ৯ ব্যক্তি হলেন, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ৬ নং পাটওয়ারীরহাট ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চর ফলকন গ্রামের দ্বীন মোহাম্মদ মাস্টার বাড়ির দ্বীন মোহাম্মদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।
রামগতি উপজেলার সেবা গ্রামের মো. রফিকের ছেলে মো. ফারুক মিয়া।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের চরহেয়ার গ্রামের ছাইদুল হকের ছেলে মো. নবীর উদ্দিন, সোনাদিয়া ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মো. শাহরাজ, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামারবাজার বন্দরটিলা এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইউসুফ উদ্দিন।
নলচিরা ইউনিয়নের ৩ নং রানী গ্রামের মো. এছহাকের ছেলে মো. আবুল কাশেম, জাহাজমারা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের ছেলে মো. শরিফ, একই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদু মিয়া বাড়ির খরিব উদ্দিনের ছেলে মো. সাহেদ ও ৩ নং ওয়ার্ড চরহেয়ার গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে মো. খান সাব।
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সিভিল জজ ও জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ করাচি (পশ্চিম) এর আদালতও এই ব্যক্তিদের মুক্তির বিষয়ে আইনগত কোনও বাধা নেই বলে আদেশ দেন। এর আগে আটক ব্যক্তিরা নিজেদের বাংলাদেশি জানালে তাদের বিষয়ে পাকিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসকে অবহিত করা হয়।
পরবর্তীতে ৯ আগস্ট পাকিস্তানে অবস্থানরত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আটক ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা ও প্রিভিয়াস ফেস প্রিভিয়াস রেকর্ড (পিসিপিআর) যাচাই করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আফরিন নাহার লতা গত বছরের ২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব বরাবর একটি পত্র দেন।
তাতে তিনি বলেন, পাকিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার থেকে পাকিস্তানের বিভিন্ন কারাগারে আটক ৪৭ বাংলাদেশির জাতীয়তা পরীক্ষা করার জন্য পত্র পাওয়া গেছে। সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
পরে ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসসিও) আটক ব্যক্তিদের মধ্যে নোয়াখালীর জেলার ৭ ও লক্ষ্মীপুর জেলার দুই ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, নাগরিকত্ব, পিসিপিআর, থানা রেকর্ডপত্র, অপরাধ তথ্য এবং জঙ্গি সম্পৃক্তার তথা আছে কিনা তার বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠাতে নোয়াখালী পুলিশ সুপারকে পত্র দেওয়া হয়। ওই মাসের ২৪ তারিখে এসব ব্যক্তিদের নাম ও ঠিকানা যাচাই করে ফেরত পাঠান নোয়াখালী পুলিশ সুপার।
তাতে বলা হয়েছে, আটক ব্যক্তিরা জন্মসূত্রে বাংলাদেশি। তাদের নাম ও ঠিকানা সঠিক। তাদের বিরুদ্ধে কোনও জঙ্গি সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য চাওয়া ৪৭ জনের মধ্যে আটক এই ৯ ব্যক্তি ছাড়া বাকি ৩৮ জনের বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।তথ্যসূত্র : বাংলা টিব্রিউন
প্রবাস সময়/নিউজ ডেস্ক
” ”> ” ”>