করোনায় লক্ষ্মীপুরের পশুর হাটগুলোতে মানা হচ্ছে না সরকারের নির্দেশনা মতে স্বাস্থ্য বিধি। এতে করে করোনা সংক্রমণ আরও দ্রুত ছাড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে, জেলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হন। এরমধ্যে ৯৫৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৭১ জন।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আযহা’র দিন ঘনিয়ে আসলেও, এখনো জমে উঠেনি কোরবানি পশুর হাট।
সাধারণ মানুষ বলছেন, করোনাকালীন সময়ে আর্থিক সঙ্কটে থাকায় অনেকের কুরবানী দেওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর বিক্রেতারা বলছে, কুরবানীর পশু বিক্রি করতে না পারলে তাদেরকে আর্থিক লোকসানে পড়তে হবে। একইভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন গরু বাজার ইজারাদারেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন পশুরু হাটে মানুষের বেশ সমাগম রয়েছে। করোনা সংক্রমণরোধে হাটে-বাজারে সরকারী নির্দেশনা থাকলেও ক্রেতা বা বিক্রেতাদের তা মানতে দেখা যায়নি। জড়োসড়ো হয়ে পশু যাচাই বা দরদাম করতে দেখা গেছে তাদের। মাস্কও ব্যবহার করছে না অনেকেই। তবে, মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও পশু কেনা-বেচা হচ্ছে খুবই কম।
ক্রেতারা বলছেন, দরদাম যাচাই করে আরও কয়েকদিন পর তারা পছন্দের পশুটি কিনবেন।
গরু দেখতে আসা আবদুল খালেক জানান, তিনি গরুর দাম দেখতে এসছেন। তবে এখনো কেনার সিদ্ধান্ত নেননি। একদিকে বর্ষা মৌসুম, অন্যদিকে গো-খাদ্যের সঙ্কট। তাই ঈদের খুব কাছাকাছি সময়ে তিনি গরু কেনার চিন্তা করছেন।
আবদুন নুর নামে অরেকজন বলেন, ‘গরুর দাম গেল বছরের তুলনায় স্বাভাবিক থাকলেও করোনায় আর্থিক সঙ্কটের কারণে গরু কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
সদর উপজেলার চররুহিতা এলাকার গরুর ব্যবসায়ী বাবুল জানান, তিনি কুষ্টিয়া থেকে বড় আকারের ১০ টি গরু বিক্রির জন্য এনেছেন। গরু প্রতি তার খরচ হয়েছে এক লাখ ২০ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। গত কয়েকদিন থেকে বিভিন্ন বাজারে গরুগুলো উঠিয়েছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি তিনি।
এদিকে, বাজার ঘুরে দেশিয় গরুর চেয়ে ভারতীয় গরুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশি গরুর বিক্রেতারা।
ব্যবসায়ী হাসানুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে দেশী গরুর চেয়ে ভারতীয় গরু বেশি থাকায় দাম পাওয়া যাচ্ছেনা। সরকার যেন ভারতীয় গরু আসা পুরোপুরি বন্ধ রাখে। তা না হলে দেশি গরুর খামারী এবং ব্যবসায়ীরা চরম লোকসানে মুখে পড়বে।’
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন শাহী বলেন, ‘পৌরসভার পক্ষ থেকে হাটে আসা লোকজনকে মাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সচেতন না হওয়ায় স্বাস্থ্য বিধির বিষয়টি পুরোপুরো রক্ষা করা যাচ্ছে না।’
পৌর গরু বাজারের ইজারাদার মো. মনির হোসেন বলেন, ‘বাজারে গরুও কম, ক্রেতাও কম। ‘ক্রেতা-বিক্রেতা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে অনুরোধ করা হয়েছে। এজন্য সেচ্ছাসেবী সদস্যরাও কাজ করছে।’
জেলার সচেতন মহল বলছেন, পশুর হাটে স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পশুর হাট ইজারাদার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও এ ব্যপারে কাজ করতে হবে।
নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর
” ”> ” ”>