নিজস্ব প্রতিনিধি: কুমিল্লা জেলার লালমাইতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরী নাতিনকে পটিয়ে বিয়ের ঘটনায় এবার নিকাহ রেজিষ্টার (কাজী) গোরাম সারওয়ার মজুমদার গ্রেফতার হয়েছেন।
প্রতারণার মাধ্যমে অন্যের নাম, সীল,কাবিন ব্যবহার করে ওই বিয়ে দেয়ার অভিযোগে তাকে শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি লাকসাম উপজেলার নিকাহ্ রেজিষ্টার ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক।
এদিকে গ্রেফতার কথিত নানা সামছুল হককে (৬৫) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
১৫ মে শুক্রবার দুপুরের কিশোরীর জবানবন্দী রেকর্ড করেন কুমিল্লার আমলী আদালত।
ভিকটিমের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পেরুল গ্রামের ইমান হোসেন ঢাকায় চাকরি করেন। সে কারনে গ্রামে তার মেয়েকে স্কুলে আনা-নেওয়া ও পরিবারের দেখভাল করার জন্য কেয়ারটেকার রাখেন একই গ্রামের রিক্সা চালক সামছল হককে।
সে সুবাধে ইমান হোসেনের ২য় মেয়ে (১৩) ৮ম শ্রেণির ছাত্রী মরিউমকে রিক্সায় নিয়মিত স্কুলে আনা নেওয়া করতেন সামছুল হক।
একপর্যায়ে রিক্সাচালক ৬৫ বছর বয়সী সামছুল হক কৌশলে প্রেমের ফাঁদে পেলেন ওই স্কুল ছাত্রীকে।
ওই ছাত্রীর মাকে মেয়ে ডেকে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায়ই তিনি ওই বাড়ীতে রাত্রীযাপন করতেন।
এ নিয়ে স্থানীয়রা আপত্তি করলে, তিনি প্রাপ্ত বয়স হলে কিশোরী ছাত্রীর সঙ্গে মনির নামে তার নিজ ছেলের বিয়ে দেয়ার কথা বলে প্রচার করেন।
কিন্তু গত ১০ মে রবিবার ৬৫ বছরের সামছুল হক সবাইকে হতবাক করে বছরের ১৩ কিশোরীকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। এনিয়ে স্থানীয়দের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ১১ মে সোমবার পেরুল দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক ও কিশোরীকে ইউপি কার্যালয়ে হাজির করে বিস্তারিত জানতে চান।
ওই সময় সামছল হক কিশোরীর প্রাথমিক শিক্ষা সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদ ও বিয়ের কাবিননামা উপস্থাপন করেন। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সনদ ও জন্মনিবন্ধনে তার জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ০২/০২/২০০২ইং।
কাবিননামায় দেখা যায়, গত ১০ মে কুমিল্লা সিটি কর্পোশেনের ৭নং ওয়ার্ড এর নিকাহ রেজিষ্ট্রার মুজিবুর রহমান সরকারের কার্যালয়ে ৫লক্ষ টাকা মোহরানায় বই নং ৫৪, পৃষ্ঠা নং ২৮ ও ক্রমিক নং ৪৪০-এ তাদের বিয়ে রেজিষ্ট্রি হয়। এতে সামছল হকের জন্মতারিখ ০৩/০১/১৯৫৫ইং উল্লেখ রয়েছে।
১৪ মে বিকালে কিশোরীর মা তাছলিমা বেগম বাদী হয়ে সামছল হকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২/৩জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন ২০০৩) এর ৭/৩০ ধারায় লালমাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে লালমাই থানার এস আই মোশারফ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে উপজেলার পেরুল উত্তরের হরিশ্চর স্কুল সংলগ্ন হাবিব স্যারের ভাড়া বাসা থেকে সামছল হককে গ্রেফতার করেন। এসময় পুলিশ তার হেফাজত থেকে ওই কিশোরীকেও উদ্ধার করেন।
লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, বৃদ্ধ সামছল হককে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো পাঠানো হয়েছে। প্রতারণার অভিযোগে সারোয়ার মজুমদার কাজীকে গ্রেফতার করা হয়।
নিজস্ব প্রতিনিধি/লালমাই,কুমিল্লা/ এমআর ” ”> ” ”>