বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে চাইলে…

প্রকাশঃ

 

প্রবাস সময় ডেস্ক: বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষা নিতে আগ্রহী। কিন্তু কিভাবে কোথায় আবেদন করবেন, প্রক্রিয়া জানা থাকায় পড়েন নানা ভোগান্তিতে।

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে চাইলে কি করবেন, যাঁদের বিদেশে পড়াশোনার বিষয়ে তথ্য জানার আছে, তাঁরা এই লেখাটা পড়তে পারেন বা সংগ্রহে রাখতে পারেন।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি :

১. প্রথমে পাসপোর্ট করে নিন। তবে পাসপোর্টে যাতে সার্টিফিকেটের নাম ও জন্মতারিখ যেন মিল থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

২. একাডেমিক পরীক্ষার ভালো ফলাফল  ছাড়া ইংরেজিতেও দক্ষতা থাকতে হবে।  আইইএলটিএসে ন্যূনতম ৬-৭ স্কোর থাকতে হবে। না থাকলে বিদেশে পড়াশোনার চেষ্টা করে লাভ নেই। বিশেষত স্কলারশিপ যে মিলবে না এটা নিশ্চিত। তবে চীন, জাপান, জার্মানি ও ফ্রান্স এসব দেশে যেতে চাইলে ওই দেশের ভাষাটাও শিখে নেওয়া ভালো।

তাই আইইএলটিএসের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন। এ ক্ষেত্রে আপনি ইউটিউবের ভিডিও দেখে কিংবা ব্রিটিশ কাউন্সিল, এক্সিকিউটিভ কেয়ার বা অন্য কোনো কোচিং সেন্টারের সহায়তা নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। ভালো প্রস্তুতি থাকলে আইইএলটিএস পরীক্ষাটা দিয়ে ফেলুন। আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আপনার পাসপোর্টের প্রয়োজন হবে।

৩. সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ইংরেজিতে করিয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দু’ভাবে অনুবাদ করা যায়। বোর্ডের একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে জমা দিয়ে শিক্ষা বোর্ড থেকে সনদপত্র ও নম্বরপত্রের অনুবাদ কপি তোলা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে একটু সময় বেশি লাগে বলে আপনি ইচ্ছে করলে নোটারি পাবলিক থেকেও অনুবাদ করাতে পারেন।

৪. ছবি ও সব একাডেমিক সার্টিফিকেট অবশ্যই বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ শাখা থেকে সব কাগজপত্রের মূল কপি দেখানো সাপেক্ষে সত্যায়িত করিয়ে নিতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সার্টিফিকেট সত্যায়িত করতে টাকা লাগে না। এ ছাড়া নোটারি পাবলিক থেকেও সত্যায়িত করা যায়।

৫. আপনার কোনো স্টাডি গ্যাপ থাকলে সেটা কেন বা ওই সময় চাকরি করলে তার প্রমাণপত্র সংগ্রহে রাখতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষে এসব লাগতে পারে। স্কলারশিপের জন্য একটা মোটিভেশন লেটার লিখুন। আপনি কেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অমুক বিষয়ে পড়তে যেতে আগ্রহী, আপনার পরিকল্পনা ও আপনাকে কেন স্কলারশিপ দেওয়া যেতে পারে, এগুলো সুন্দর ও যৌক্তিকভাবে মোটিভেশন লেটারে লিখুন।

৬. ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট অর্থাৎ আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র লাগবে। বিদেশে পড়াশোনাকালে আপনি যাবতীয় খরচ বহন করতে পারবেন। এ জন্য বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট লাগে। প্রমাণস্বরূপ ব্যাংক গ্যারান্টিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি লাগবে।কারণ, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ভর্তি হতে চাচ্ছেন তার খরচ বহন করা আপনার পক্ষে সম্ভব কি না, সেটা কর্তৃপক্ষ দেখবে। যদি মনে করে ব্যয়ভার বহন করা শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়, তাহলে ভিসা মিলবে না।

৭. বিদেশ ভ্রমণের জন্য আপনাকে ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স করতে হবে।

ওপরের সবগুলো নিয়ে যদি আপনি প্রস্তুত। তাহলে আবেদন ও ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরু করে দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যখন দেখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে যোগ্যতাগুলো দরকার, সেগুলোর সঙ্গে আপনার যোগ্যতা মিলে যাচ্ছে, তখন আপনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করবেন। সেখানে দেওয়া আছে আবেদন করার শেষ সময় কত তারিখ কিংবা ঠিক কবে থেকে আবেদন করা যাবে।

অনলাইনে আবেদন করে ফেলুন, সেই সঙ্গে আপনার সব সার্টিফিকেট ও অন্য যেসব কাগজপত্র চায় সেগুলো সব স্ক্যান করে আপলোড করে দিন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো আপনাকে বলবে, কাগজগুলোর কপি পাঠাতে। সে ক্ষেত্রে বাইপোস্টে পাঠিয়ে দেবেন। নির্দিষ্ট দেশের বাছাইকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য প্রথমে ভর্তি তথ্য, প্রসপেক্টাস ও ভর্তি ফরম চেয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার সময় নির্দিষ্ট দেশ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে একটা আবেদন ফি পরিশোধ করতে হয়। তবে আমার জানামতে, এটা ১০ হাজার টাকার মধ্যে।

আবেদন করার পর মাসখানেক বা মাস দু-এক পরে তারা আপনাকে ই–মেইল করে জানাবে, আপনি অ্যাডমিশন পেয়েছেন কি না। অ্যাডমিশন যদি পান, তাহলে তারা অ্যাডমিশন লেটার পাঠিয়ে দেবে। ভর্তির অনুমতিপত্র বা অফার লেটার পাওয়ার পর সাধারণত অফার লেটারে বা প্রসপেক্টাসে উল্লেখিত টিউশন ফির সমপরিমাণ অর্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক ড্রাফট করতে হবে। সেই সঙ্গে আপনাকে বলবে ভিসার আবেদন করতে।

ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও প্রায় সব নিয়মই একই রকম। ভিসার আবেদন করা মোটেই ঝামেলার কিছু নয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি চান্স পেয়েছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই দেখবেন আলাদা করে একটা লিংক দেওয়া আছে, সেই দেশের মাইগ্রেশন বোর্ডের। সেখান থেকে আপনি জেনে নিতে পারবেন কীভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

ধরুন, আপনি ইউরোপের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাডমিশন পেয়েছেন। এখন আপনাকে ভিসা কিংবা রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই ভিসার আবেদনপত্র সরবরাহ করে থাকে। এ ছাড়া আপনি বাংলাদেশে ওই দেশের অ্যাম্বাসিতেও যোগাযোগ করতে পারেন। তারা বসেই আছে আপনাকে তথ্য দেওয়ার জন্য।

অ্যাম্বাসি মানেই ভয়ের কিছু নয়। তারা বসেই আছে আপনাকে তথ্য দেওয়ার জন্য কিংবা ভিসা দেওয়ার জন্য। আপনাকে স্রেফ নিয়ম মেনে এগোতে হবে। নির্দিষ্ট দূতাবাস থেকে ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করে সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুলভাবে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রসহ দূতাবাসে জমা দিতে এবং নির্দিষ্ট দিনে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর

সৌদিতে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

0
  সৌদি আরবে কাজ করার সময় ভবনের ৩য় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইউছুপ (২৬) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহম্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ...

জনপ্রিয় খবর