লক্ষ্মীপুর: শরৎ শুভ্রতার ঋতু। শরৎ মানেই প্রকৃতিতে নীল আকাশে সাদা মেঘের ঢেউ। শরৎ মানেই নদীর তীরে তীরে কাশফুলের সাদা হাসি।
তাই কবি জীবনন্দ দাশ বলেছেন, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রুপ খুঁজিতে যাই না আর’। শরতের এই অপরূপ দেখে মুগ্ধ কবি অবলীলায় পৃথিবীকে আর দেখার প্রয়োজন নেই সিদ্ধান্ত নেন।
সবুজ আর সাদা দুটিই শান্তির প্রতিক। আর এই দুইটি ঘিরেই কাশফুল। তাই খুব সহজেই এটি মানুষের মনকে সাজিয়ে তোলে। আর এই কাশ নদীর পাশ কিংবা বিশাল চরেই দেখা মিলে।
এ কাশফুলে সেজে রয়েছে লক্ষ্মীপুরের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটা। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে উঠছে দর্শণার্থীরা। ওই ইটভাটায় কাশফুলকে ঘিরে দর্শণার্থীদের পদচারণা ঘটে।
স্মৃতি হিসেবে সবাই ক্যামেরায় ধারণ করে কাশফুলের ছবি। নিজেদের ছবি তোলাও বাদ যায় না। বন্ধুমহল, স্বামী-স্ত্রীসহ অনেককেই কাশফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা গেছে। আবার তরুণীরা গাছ থেকে ছিঁড়ে কাশের গোছা সঙ্গে করে নিয়ে যায়।
বলা চলে, চমৎকার মেঘের ঋতু শরতের আকাশ থাকে নীল আর ঝকঝকে পরিস্কার। ওই আকাশের মাঝে টুকরো টুকরো সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। সবুজ প্রকৃতিতে বাতাসের সঙ্গে খেলা করে সাদা কাশ। এই ঋতুতেই মাটি লেপন করে গৃহবধূরা গ্রামীণ ঘরগুলোকে নিপুণ করে সাজিয়ে তোলে। তবে এখন সেটি খুব কমই চোখে পড়ছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে শাকচর গ্রামে সড়কের পাশে মেসার্স একেপি ব্রিকস’র পরিত্যক্ত ইটভাটাটি রয়েছে। বেশ কয়েকবছর হয়েছে সেখানে ইট তৈরি হচ্ছে না। তবে প্রতিবছরই কাশফুল ফুটে দর্শণার্থীদের রশদ যোগাচ্ছে।
জেলার পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত মজুচৌধুরীর হাট মেঘনা তীরে যাওয়ার পথেই কাশফুলগুলো দেখতে পাওয়া যায়।
জানা গেছে, ভাদ্র-আশ্বিন দুই মাস শরৎকাল। এটি বাংলাদেশের ষড়ঋতুর তৃতীয় ঋতু। আবার পৃথিবীর ৪টি প্রধান ঋতুর একটি শরৎকাল। এই ঋতু আসলেই প্রকৃতি সবুজে ভরে উঠে। নদী-খালের তীর, গ্রাম ও চরাঞ্চলে কাশফুল দেখা যায়। সবুজের ঘেরা প্রকৃতির মাঝে সাদা কাশ ছোট-বড় সব মানুষেরই নজর কাড়ে। কালের বিবর্তনে কাশফুল কম দেখতে পাওয়া যায়। হয়তো নদীর জেগে উঠা চরে এর দেখা মেলে। তবে সেখানে যাওয়া সবার জন্য সম্ভব না।
পরিবেশবাদী সামাজিক সংগঠন সবুজ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবু জানান, কাশফুল হারিয়ে যাচ্ছে। যেসব জায়গায় কাশফুল ফুটে ওই স্থানগুলোকে সংরক্ষণ করা দরকার। তাহলে আমাদের পরিবেশের পাশাপাশি দর্শণীয় স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। লক্ষ্মীপুরে কাশবনটিতে মানুষের ভীড়।
নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর