সুইডিশ নাগরিক মনোরা। ১৯৭৮ সালে খুলনায় একটি শিশু সদনে বাবা মা অভাবের তাড়নায় ফেলে যায় তাকে। খুলনা থেকে ঢাকায় এনে তাকে সুইডেনে পাঠানো হয়।
২০০৫ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের খুলনায় বাবা মাকে খুঁজতে গিয়েছিলেন মনোরা। অনেক অফিসে গিয়েও কোন তথ্য পাননি তখন। এরপর, থেমে থেমে চেষ্টা করেছেন বহুবার। লাভ হয়নি। মনোরা কিন্তু থেমে নেই। ডিএনএ পরীক্ষা থেকে শুরু করে নানা কায়দায় জন্মদাতা বাবা মায়ের খোঁজ পেতে মরিয়া এই সুইডিশ নাগরিক। এখনো বাংলাদেশি বাবা-মায়ের সন্ধান পেতে মরিয়া সুইডিশ নাগরিক মনোরা।
মনোরার কাছে থাকা একটা চিঠির সূত্র ধরে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে খুলনায় একটি শিশু সদনে বাবা মা অভাবের তাড়নায় ফেলে যায় তাকে। খুলনা থেকে ঢাকায় এনে তাকে সুইডেনে পাঠানো হয়।
স্বাধীনতার পর যুদ্ধশিশুদের বিদেশে দত্তক দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়। সেটি একসময় রীতিমতো শিশু পাচারে পরিণত হয়। ১৯৭০ এর দশকের শেষার্ধে এসে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন ডক্টর জ্যাক প্রেগার নামের এক ব্রিটিশ চিকিৎসক।
তিনি দাবি করেছিলেন, টঙ্গীর একটি এনজিওতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি শিশুপাচারে জড়িত। কিন্তু, এ অনুসন্ধানের কোন কিনারা সেসময় হয়নি। সম্প্রতি নেদারল্যান্ড সরকার দত্তকপ্রথা স্থগিত করে দিলে আবার আলোচনা আসেন ডক্টর প্রেগার। অনেকটা সত্য প্রমাণিত হয় তার দাবি। নেদারল্যান্ড বলছে, বাংলাদেশসহ আরো কয়েকটি দেশ থেকে শিশু দত্তক নেয়া হয়েছে চুরি, নয় কেনাকাটার মাধ্যমে। এর মানে, একাজে তখন একটা মাফিয়াতন্ত্র চালু হয়। মনোরা কি সেই মাফিয়াতন্ত্রের শিকার?
মনোরার মনে এখন নানান প্রশ্ন। তাকে কি চুরি করা হয়েছে? নাকি, কৌশলে কিনে নিয়ে পাচার করা হয়েছে?
প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া কঠিন। কিন্তু মনোরার বাবা মাকে খুঁজে পাওয়া কি কঠিন? মনোরা তার বাবা মাকে খুঁজছে, এটা যদি ছড়িয়ে যায় অলিগলিতে, আকাশেবাতাসে। সবার সহযোগিতায় মনোরা তার বাবা-মাকে খুঁজে পাবেন, এমন প্রত্যাশা।
প্রবাস সময়/এমআর