সৌদিতে বাংলাদেশীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার : পরিবারে শোকের মাতম

প্রকাশঃ

বিশেষ প্রতিনিধি: সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের নিকটতম আল হারমোলিয়াহ এলাকার একটি ছাগলের খামারে প্রবাসী বাংলাদেশী আবদুর রহমানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে সৌদিপুলিশ।

নিহত আবদুর রহমান লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডস্থ উত্তর চরলরেঞ্চ গ্রামের মোঃ হানিফের ছেলে।

বৃহস্পতিবার ( ৫ মে) বিকেলে আবদুর রহমানের বাবা মোঃ হানিফ ও ভাই আবুল কাশেম সংবাদটি নিশ্চিত করেন। এর আগে ১ মে সৌদি আরবের পুলিশ তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করলেও পরিবার ৫ দিন পর সে খবরটি জেনেছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানায়, আবদুর রহমানকে খুন করে তার লাশ রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গাড়ি চাপায় মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে সেখানকার মালিকপক্ষ। তবে উক্ত ঘটনায় পুলিশ এক সৌদি নাগরিক ও একজন সুদানি নাগরিককে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে বলেও জানান নিহতের পরিবার।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছেলেকে হারিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন শোকাতুর বাবা-মা। অন্যদিকে ছেলের লাশ দেশে আনতে আহাজারি করছে অসহায় পরিবার। পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

নিহতের মা লাকী বেগম জানায়, সৌদি আরবে ঈদের আগের দিন বিকেল বেলায় ছেলের সাথে তার শেষ কথা হয়। এরপর তার ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মেয়ের জামাই সৌদি প্রবাসী মোঃ ইউছুপের সহায়তা নেওয়া হয়। ইউছুপ আল হারমোলিয়াহ এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে আবদুর রহমানের সাথে তার সুদানি এক সহকর্মীর  ঝগড়া হয়েছিল। ঝগড়ার একদিন পর রহমানের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। ইউছুপকে সেখানকার স্থানীয়রা জানায়, আবদুর রহমানকে খুন করা হয়েছে। পরে ইউছুপ স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার লাশ দেখে আসে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের দিকে স্থানীয় এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ভালো চাকুরীর আশায় সৌদি আরব যান আবদুর রহমান। কিন্ত সৌদি গিয়ে জানতে পারে তার চাকুরী মরুভূমিতে উট চরানো। এ কাজ করা তারপক্ষে মোটে সম্ভব ছিল না। তবুও বহু কষ্টে তিনি ২ বছর কাটিয়েছেন।

করোনার সময়ও তার কোন ছুটি ছিল না। এর মাঝে কারণে অকারণে মালিকপক্ষ তাকে মারধর করতো। পরে অতি নির্যাতনে সেখান থেকে একদিন তিনি পালিয়ে অন্যত্র চলে যান। যুক্ত হন নতুন আরেকটি কাজে। কিন্ত এখানে গিয়েও সে জানতে পারে তার কাজ মরুভূমিতে ছাগলের খামারের শ্রমিক। নতুন কর্মক্ষেত্রে  সুদানি সহকর্মীদের সাথে তার  প্রায় ঝগড়া হতো। পরে ১ মে তারিখে রক্তাক্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিদেশে অবস্থানরত স্বজনদের বরাত দিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানায়, সুদানি কোন একসহকর্মী এবং মালিকের একআত্মীয় মিলে রহমানকে খুন করে গাড়ি চাপায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে মিথ্যা প্রচার করে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রহমানের লাশের মাথার পিছনে জখম রয়েছে। শরীরের বাকি অংশগুলো অক্ষত।

এঘটনায় কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সোলাইমান জানান, এ বিষয়ে তাকে এর আগে কেউ জানায়নি। এখন নিহতের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান জানান, খোঁজ নিয়ে লাশ দেশে আনার বিষয়ে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারকে সহায়তা করার চেষ্টা করবো।

প্রবাস সময়/এমআর

সর্বশেষ খবর

সৌদিতে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

0
  সৌদি আরবে কাজ করার সময় ভবনের ৩য় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইউছুপ (২৬) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহম্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ...

জনপ্রিয় খবর