গেল বছরের শেষের দিকে, চীনের উহানে প্রথম দেখা দিয়েছিল করোনাভাইরাস। তখন আঁচ করা যায়নি প্রাণঘাতি এ ভাইরাসের নিষ্ঠুরতা।
দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বে। করোনার হানায় বিশ্বের অধিকাংশ দেশ লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল ভারী হতে দেখেছে নিউইয়র্কের বাসিন্দারা।
হাসপাতালে সারি সারি লাশ, রাজ্যজুড়ে এম্বুলেন্সের সাইরেন আর স্বজনহারা মানুষের বুকফাটা আর্তনাদ নীরবে সহ্য করেছে থমকে যাওয়া এ রাজ্যের প্রকৃতি।
ভয়ে, আতঙ্কে ও সরকারি বিধি নিষেধের কারনে দাফন কিংবা সৎকারে মানুষের উপস্থিতি মিলেনি। প্রিয়জনের লাশ শেষবারের মতো দেখাটাও অনেকের ভাগ্যে জোটেনি।
জুনের শুরু থেকে পৃথিবীর রাজধানী হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্কে কমে এসেছে মৃত্যুর সংখ্যা। ৮ জুন তুলে নেওয়া হয়েছে লকডাউন। বুকে স্বজন হারানোর ক্ষত নিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় শহরে বাড়ছে কোলাহল।
নিউইয়র্কে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত (১৭ জুন) প্রাণ হারিয়েছেন ২৭০ জন প্রবাসী বাংলাদেশি। এ সংখ্যা আর বেশি হতে পারে।
মৃত্যুর এ সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া গেছে বাংলাদেশি বিভিন্ন কমিউনিটি ও মারা যাওয়া ব্যাক্তিদের স্বজনের মাধ্যমে। যদিও বাংলাদেশি দূতাবাস বা সরকারিভাবে মৃতদের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
১৯ মার্চ করোনায় নুরজাহান বেগম নামে এক বাংলাদেশির প্রথম মৃত্যু হয়। নিউইয়র্কে মারা যাওয়া এসব বাংলাদেশির মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪১ জনকে বাংলাদেশ সোসাইটি দাফনের ব্যবস্থা করেছে। লংআইল্যান্ড, ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল, নিউজার্সির মালবরো কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
এরমধ্যে ৩০ টি কবরের অর্থ মিলবে, অন্যগুলো বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে দান করা হয়। এছাড়াও হিন্দু বা অন্য ধর্মাবলম্বীদের অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সোসাইটির কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সোসাইটি ছাড়াও বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি, সন্দীপ সোসাইটি, বিয়ানীবাজার সমিতিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিনা মুল্যে কবর দান করেছে।
নিউইয়র্ক প্রতিনিধি/যুক্তরাষ্ট্র/এমআর