সাংবাদিক জামাল খাশোগি তুরস্কের সৌদি দূতাবাস ভবনে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল বলে ধারনা করছেন তুরস্ক পুলিশ।
তুরস্কের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সৌদি কনস্যুলেটেরই টেকনিশিয়ান জেকি ডেমির জানান, খশোগি দূতাবাসে পৌঁছানোর এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে কনসালের বাড়িতে চুলা (ওভেন) জ্বালাতে বলা হয়েছিল তাকে। চুলার পাশের আলামত দেখে মনে হয়েছে সেগুলো কেমিক্যাল দিয়ে পরিষ্কার করা।
এছাড়া কনসালের বাগানে থাকা ওই চুলার পাশাপাশি কিছু ঝলসানো মাংস খণ্ড ও বারবিকিউ মতো দেখতে পেয়েছিলেন ডেমির।
তুরস্ক পুলিশের ধারণা, খাশোগিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে রাসায়নিক দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেকি ডেমিরের সাক্ষ্য পুলিশের সে সন্দেহকে আরও জোরালো করে তুলেছে।
২০১৮ সালের অক্টোবরে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে রিয়াদ কর্তৃপক্ষ।
তাদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কর্মকর্তাদের ভুলে নিহত হন ওই সাংবাদিক। তবে তার মৃতদেহের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। গত বছরের ডিসেম্বরে এই ঘটনায় পাঁচ কর্মকর্তাকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও তাদের নাম প্রকাশ করেনি সৌদি আরব।
তুরস্ক আলাদাভাবে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালিয়েছে। শুক্রবার (৩ জুলাই) ইস্তানবুলের একটি আদালতে অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতেই ২০ সৌদি নাগরিকের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।
আদালতে ডেমির বলেন, কনসালের বাড়িতে পাঁচ-ছয়জন লোক ছিলেন। তারা আমাকে তন্দুর চুলা জ্বালাতে বললেন। সেখানে আতঙ্কের আবহ বিরাজ করছিলো। চুলার চারদিকে মার্বেল পাথরের যে স্লাবগুলো ছিল তার রঙ পাল্টে গিয়েছিল। কোনও রাসায়নিক দিয়ে পরিষ্কারের কারণে রঙ বদলে গিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা তার।
কনসালের গাড়ি চালকও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। একটি অস্বচ্ছ জানালার গাড়ি আসার পর গ্যারেজের দরজা খুলে দিতে চেয়েছিলেন ডেমির। তবে তাকে দ্রুত সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল।
ওই জবানবন্দিতে আরও দাবি করা হয়, সৌদি আররের গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক উপপ্রধান আহমেদ আল আসিরি ও সাবেক রয়েল কোর্ট উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানি পূর্বপরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডে উসকানি দিচ্ছিলেন।
প্রবাস সময় ডেস্ক ” ”> ” ”>