নোয়াখালী: বেগমগঞ্জের একলাশপুরে স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজ ঘরে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে ভিডিও চিত্র ধারনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অভিযোগ রয়েছে, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ঘটনায় জড়িত স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ওই ভিডিও চিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।
এদিকে পাশবিক নির্যাতনের এ ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালের আগ পর্যন্ত জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘৩৩ দিন কোথায় ছিল প্রশাসন। প্রশাসনের নিস্কৃীয়তায় সমাজে খুন ধর্ষনসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে চলছে ‘
এজহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রাখে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী দেলোয়ার, বাদল ও তাদের সহযোগীরা।
এসময় রহিম, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা ওই গৃহবধূকে অনৈতিক কাজ করেছে বলে অভিযোগ এনে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার পর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অভিযোগ করে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ঘটনাটি জানাজানি হলেও স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন নীরবতা পালন করে। উল্টো ভুক্তভোগী গৃহবধু সন্ত্রাসীদের ভয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেন।
পরে ঘটনার ৩৩ দিন পর (রোববার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ভিডিও চিত্র ভাইরাল হলে দেশ-বিদেশের বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। এতে করে টনক নড়ে প্রশাসনের। ৩৩ দিন পর নয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা রুজু হয়। একই দিন দুই আসামীকে পৃথকস্থান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রোববার সকালে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের এক মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও চিত্র। তা দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী দেশে-বিদেশের বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। ফেসবুকে অনেকেই ধিক্কার জানিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।
নোয়াখালীর সন্তান যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি মোস্তফা কামাল মাহমুদ তার ফেসবুক পোষ্টে লিখেন, ‘দিনের পর দিন ধর্ষণ বাংলাদেশে সংক্রমিত হচ্ছে ভাইরাসের মতো। সরকার এটা বন্ধ করতে ব্যর্থ। ধর্ষণের চিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করা হচ্ছে সরাসরি। কোটি মানুষ মিনিটেই এই বর্বরতার চিত্র দেখছে। লজ্জায় আমাদের মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে। অপরাধীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
সাংবাদিক জয়নুল আবেদীন লিখেছেন, ‘একলাশপুরের ওই নারীর বুকফাটা আর্তনাদ গোটা দেশকে কাঁদিয়ে ছাড়লো। অনেকেই অঝরে কাঁদছে। ভয়ে ঘুম আসছে না। মানবমনে চরম আঘাত!’
যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ্মীপুর সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক খোরশেদ আলম লিখেছেন ‘ একমাত্র ধর্ষকের জন্য জনসম্মেুখে ক্রসফায়ার প্রযোজ্য।’
আরিফ হোসেন নামে একজন লিখেছেন,‘‘৩৩ দিন কোথায় ছিল প্রশাসন। প্রশাসনের নিস্কৃীয়তায় সমাজে খুন ধর্ষনসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে চলছে। ‘
নিজস্ব প্রতিনিধি/এমআর