কুয়েতে গ্রেফতার সাংসদ শহিদ ইসলামের পাপুলের কাছ থেকে লক্ষ্মীপুরের আওয়ামী লীগের ৩৯ জন নেতা টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এরমধ্যে শুধু রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রায়পুর পৌরসভার মেয়র ইসমাইল খোকনকে ১৭ মাসে ৮ কোটি ৯২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯০ টাকা দেয়া হয়েছে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি শহিদ ইসলামের তাঁর স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম দুদকে এমন তথ্য দেন।
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের সাধারণ সম্পাদক, মেয়র পদবি ও প্রভাবশালী নেতার আত্মীয় হওয়ায় নানা বিষয় ‘ম্যানেজ’ করতে এই টাকা দেওয়া হয়। তিনি সব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ইসমাইল দাবি করেন, দলীয় কাজে ব্যয়ের জন্য তাঁকে টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে এখন আসল রহস্য উদ্ঘাটনে অনুসন্ধানে নেমেছে ১৭ মাসে ৮ কোটি ৯২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯০ টাকা
শহিদ ইসলাম, তাঁর স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ রাখা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বুধবার দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা করেন।
শহিদ ইসলাম পাপুল গত জুনে গ্রেপ্তার হয়ে কুয়েতের কারাগারে আছেন। সে দেশের আদালতে তাঁর বিচার চলছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অঢেল টাকা ঢেলে এবং আওয়ামী লীগের সমর্থনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র (রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সদরের আংশিক) সাংসদ হন তিনি। পরে তাঁর স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনের সাংসদ হন।
২০১৭ সালের ১২ মার্চ থেকে ২০১৮ সালে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেশ কয়েক ধাপে ইসমাইল খোকনকে টাকা দেন সাংসদ শহিদ। তাঁর স্ত্রী সেলিনা ইসলাম টাকার এ হিসাব দুদকে দাখিল করেছেন।
তাতে দেখা যায়, খোকনের বেসরকারি ব্যাংকের রায়পুরের শাখায় দুটি হিসাব রয়েছে। এশিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের ওই দুটি হিসাবে বিভিন্ন ধাপে প্রায় ৪ কোটি টাকা দিয়েছেন শহিদ। এর মধ্যে একটি হিসাবেই দিয়েছেন অধিকাংশ টাকা। এক ধাপে সর্বোচ্চ দিয়েছেন ৫০ লাখ টাকা, ২০১৮ সালের ৩ জুন।
এছাড়াও আরও ৩৮জন টাকা নিয়েছেন পাপুলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।ঠ
রায়পুর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকন বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরের ৩৯ জনকে টাকা দেওয়ার একটি হিসাব সেলিনা ইসলাম দুদকে দাখিল করেন। দুদক আমাকে ডেকেছে, আমাকে দেওয়া টাকা দলীয় কাজে কোথায় খরচ করেছি, সে হিসাব দিয়েছি। আমার ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এমপি হওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন শহিদ ইসলাম। এমপি হওয়ার পর আমার সঙ্গে তাঁদের আর বনিবনা হয়নি। এ কারণে তাঁরা এখন আমার বিরোধিতা করছেন।’
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুয়েতে মানব পাচারে অভিযুক্ত এ সাংসদকে ২০১৬ সালের কোরবানি ঈদের আগে গ্রামের মানুষ চিনতেন না। গ্রামের বাড়ির সামনে মায়ের নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে এলাকাবাসীর নজরে আসেন তিনি। এরপরে শুধু টাকার জোরেই এলাকায় আলোচনায় আসেন তিনি। সস্ত্রীক সাংসদও হয়েছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করলেও সহিদ টাকা দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকনসহ কয়েকজন নেতার ওপর ভর করেন।
নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর