লক্ষ্মীপুর : জেলার কমলনগরে যে পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে শিশু ও নারীসহ তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সোমবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানান চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা।
গত ১৬ এপ্রিল চট্রগ্রামের ফৌজদারহাট বিআইটিআইডিতে নমুনা পরীক্ষায় তাদের শরীরে করোনা সংক্রমণের বিষয়টি শনাক্ত হয়। দীর্ঘ ১৯ দিন পর সুস্থ হলেন তারা।
সুস্থ হওয়া একজন মো. ইব্রাহিম (৫৫), তিনি উপজেলার চরফলকন এলাকার বাসিন্দা। আরেকজন একই উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের মুন্সির হাট এলাকার নয়ন আক্তার (২৭)। মো. রিহান ১১ বছরের শিশু। স্থানীয় একটি মাদ্রাসাতে পড়ালেখা করে সে।
সোমবার (৪ মে) বিকেলে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে তাদের সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
কার্যালয় সূত্র জানায়, করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে তারা কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তাদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসায় তাঁরা করোনামুক্ত বলে নিশ্চিত হয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ উপজেলাতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো পাঁচজন।
আক্রান্ত ওই তিনজন করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়ার পর সোমবার বিকলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বিদায় জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুর গাফফার, কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেবারক হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল করিম রাজীব সহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
জেলা সিভিল সার্জন তাদেরকে উপহার হিসেবে পবিত্র কোরআন শরীফ তুলে দেন। পরে তাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাড়িতে করে নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের চলাফেলা করার পরামর্শ দেয় চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের বলেন, আক্রান্ত এ তিন জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলে তাদের পরিবারকে লকডাউন করা হয়। একই সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। তবে পরিবারের অন্য কারো শরীরে করোনা শনাক্ত না হওয়ায় লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, উপজেলাতে ওই তিন জন ব্যতীত একজন চিকিৎসকসহ আরও দুইজন করোনা পজিটিভ রোগী রয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তবে শারীরিক দিক দিয়ে তারা ভালোর দিকে রয়েছে।
এর আগে জেলার রামগঞ্জ ও রামগতিতে আরও দুইজন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ওই দুইজন কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সব মিলিয়ে জেলাতে ৫ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের রবিবার রাতের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় মোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ছিলো ৪৪ জন। এদের মধ্যে একজন শনাক্ত হওয়ার আগেই মৃত্যু বরণ করে। অন্য একজন ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুরে পালিয়ে আসে।
জেলা সংবাদদাতা/প্রবাস সময়