লক্ষ্মীপুরে ‘হয়রানি’ আতঙ্কে করোনা টেষ্টে অনীহা, বাড়ছে সংক্রমণ

প্রকাশঃ

লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতিফলক। ছবি প্রবাস সময়

লক্ষ্মীপুর: জেলায় সামাজিক ‘হয়রানি’ আতঙ্কে করোনা উপসর্গের নমুনা পরীক্ষা করতে চাইছেন না অনেকেই। এছাড়াও লক্ষ্মীপুরে করোনা টেষ্ট ল্যাব না থাকায় ফলাফল পেতে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়।

এতে করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার করছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় করোনা টেষ্ট ল্যাব না থাকায় নমুনার রেজাল্ট পেতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। সেকারনে মানুষ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে চাইছেন না। এছাড়াও অনেকের উপসর্গ থাকলেও আতঙ্কে  তা গোপন করছেন।

জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ৫ জুন পর্যন্ত জেলায় ৩,৩৮৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে ফলাফল এসেছে ২,৯০০ জনের। এখনো পেন্ডিং রয়েছে ৪৮৩ জনের।

এখন পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুর পর সংগ্রহকৃত নমুনা থেকেই করোনা পজিটিভের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, করোনা উপসর্গ থাকলেও অনেকেই সামাজিক ‘হয়রানির’ ভয়ে পরীক্ষা না করে তা গোপন করছেন। করোনা পজিটিভ হলে, পরিবার বা বাড়ি লকডাউন, টেষ্ট-চিকিৎসার দীর্ঘ সূত্রিতা, সামাজিকভাবে হয়রানি, দেশের বিভিন্নস্থানের করোনারোগী নিয়ে নেতিবাচক খবরে আতঙ্ক-এসব বাজে চিন্তা থেকেই অনেকেই নমুনা পরীক্ষা করাতে চাইছেন না।

২৯ মে চন্দ্রগঞ্জ বাজারের এক ব্যবসায়ী জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হলে নোয়াখালীতে তার নমুনা পরীক্ষা করান। ১ জুন তার ফলাফল পজিটিভ আসে।

অথচ, তিনি ১ জুন পর্যন্ত বাজারে তার ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। একই ইউনিয়নের গনিপুরে একজনের মৃত্যুর পর তার নমুনায় পজিটিভ আসে। তিনিও মৃত্যুর আগে মানুষের সংস্পর্শে ছিলেন।

জেলার সব উপজেলাগুলোতে এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

টেষ্ট ফলাফল আসতে দেরি হওয়ায় বা দীর্ঘ সূত্রিতার ফলে নমুনা জমা দেওয়া ব্যাক্তিরা কোয়ারেন্টাইনকে গুরুত্ব না দিয়ে অন্যদের সংর্স্পশে আসছেন।

এছাড়াও করোনার উপসর্গ থাকা মানুষদেরকে নমুনা জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন প্রচারনা নেই বলেও অভিযোগ সচেতন মহলের।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, ৫ জুন পর্যন্ত ২৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হন। এরমধ্যে ১৩৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এছাড়াও গত দুই মাসে জ্বর সর্দি কাশি নিয়ে ৪০ জন মানুষের মৃত্যু হয়। তবে তাদের অধিকাংশেরই নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, ১৮ লাখ মানুষের জেলায় এখন পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩,৩৮৩ জনের। করোনারোধে, স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ নমুনা সংগ্রহে উদ্যোগ ও দ্রুত নমুনার ফলাফল প্রকাশ করা জরুরী।

এমনটি হলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবনতা বাড়বে। রোধ করা যাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ।

এ ব্যপারে লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন মো.আবদুল গফ্ফার বলেন, জেলায় করোনা টেষ্ট ল্যাব না থাকায় নমুনার রেজাল্ট আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এছাড়াও অনেকে নানা আতঙ্কে নমুনা পরীক্ষা করতে চাইছেন না।

করোনারোধে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। উপসর্গ দেখা দিলে তথ্য গোপন না করে দ্রুত পরীক্ষা করতে হবে।

একজনের ভুলের কারনে পুরো পরিবার–সমাজ আক্রান্ত হতে পারে। করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিরলস কাজ করছে। ২৫৪ আক্রান্তের মধ্যে ১৩৭ জন সুস্থ হয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর ” ”> ” ”>

সর্বশেষ খবর

সৌদিতে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

0
  সৌদি আরবে কাজ করার সময় ভবনের ৩য় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইউছুপ (২৬) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহম্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ...

জনপ্রিয় খবর