পাবেল খান চৌধুরী: বৈশ্বিক করোনা মহামারীর এসময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে নেই ওসমানীনগর থানার কার্যক্রম।
দিন নেই রাত নেই, সকাল কিংবা বিকেল ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সার্বক্ষনিক মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন ওই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদ মোবারক ও তার টিম।
জেলা পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশনায় মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন তারা। থানার অফিসার ইনচার্জের ব্যক্তিগত ও পুলিশ সুপারের তহবিল থেকে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীও বিতরণ করছেন।
একদিকে সচেতনতা বৃদ্ধি, অন্যদিকে মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করতে বিতরণ করছেন মাক্স, হ্যান্ড স্যানেটাইজার, গ্লাভসসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী। অসহায় দরিদ্র মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন সাধ্যমতো নগদ অর্থও।
মোহাম্মদ রাশেদ মোবারক গত বছরের শেষ দিকে যোগাদান করেন ওই থানায়। যোগাদানের পর পাল্টে যায় থানার সার্বিক চিত্রও।
ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষা এ থানা এলাকা, এখানকার বাসিন্দাদের অধির্শ প্রবাসী। এ থানা এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ছিল নিত্য দিনের স্বাভাবিক ঘটনা।
রাশেদ মোবারক থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদানের পর থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পরামর্শে ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনায় মাঠে নামেন এসব সামাজিক অপরাধ দমনের মিশনে। মাত্র অল্প কিছুদিনেই থানার অফিসার ফোর্সদের আন্তরিকতায় সুফলও পান সহজেই।
যার ফলশ্রুতিতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, জুয়াসহ সামাজিক অপরাধ কমে এসেছে। প্রায় বন্ধ হয়ে যায় গ্রাম্য দাঙ্গা-হাঙ্গামার মতো ঘটনাও। যার সুফল ভোগ করছেন পুরো ওসমানী নগর উপজেলাবাসী।
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মানুষের নানা সমস্যার কথা মাথায় নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে করোনা সংক্রমণরোধে কাজ করে চলেছেন ওসি রাশেদ মোবারক ও থানা পুলিশ সদস্যরা।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে করোনা আক্রান্ত ২৯ জন এবং উপসর্গ নিয়ে সম্প্রতি মারা গেছেন ২ জন।
করোনা থেকে উপজেলাবাসীকে রক্ষা করতে
হাটবাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রচার প্রচারণাসহ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন ওসি। কখনো হ্যান্ড মাইক, কখনো নিজের গাড়িতে মাইক লাগিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।
এ থানায় ওসি রাশেদ মোবারকের প্রায় ৮ মাস অতিক্রমকালে আইনশৃংখলার উন্নতিও হয়েছে লক্ষনীয়। আগের তুলনায় বর্তমানে থানায় মামলার সংখ্যা একেবারেই কম। নিজ কার্যালয়ে বসে না থেকে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বেশ খুশি। তারাও তাদের অবস্থান থেক চালিয়ে যাচ্ছেন মানব সেবা। বিলিয়ে দিচ্ছেন ত্রাণ সামগ্রী সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য।
অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদ মোবারক বলেন, ‘সেবাই পুলিশের ধর্ম। এই মহান পেশায় এসেছি মানুষের জানমালের নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে। আমরা আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি। করোনার এ সময়ে সবার কাছে আমার অনুরোধ আপনারা খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। নিজেকে নিরাপদ রাখুন, নিজের পরিবারকে নিরাপদে রাখুন।’
পাবেল খান চৌধুরী/হবিগঞ্জ/এমআর