লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শ্রমিক সর্দারের কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে শ্রমিক সর্দার মো. সবুজ এ অভিযোগ করেন। শ্রমিক সর্দার ৩ লাখ টাকা দিতে চাইলেও আরও বেশি টাকার দাবিতে নিচ্ছে না ওই দুই নেতা।
ভুক্তভোগী মো. সবুজ জেলা শহরের মজুপুর এলাকার বাসিন্দা। ছাত্রলীগ নেতাদের চাঁদা দাবির ভয়ে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুতের কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শ্রমিক সর্দার সবুজকে খুঁটি আনা নেওয়ার কাজ দেয়। সেই সুবাধে সবুজ নিয়মিত খুঁটি আনা নেওয়া করছে। হঠাৎ করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল করিম নিশান নেতাকর্মী নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ে সবুজকে খুঁজতে হানা দেয়।
একপর্যায়ে তারা সবুজের কাছে চাঁদা দাবি করে। ঘটনাটি সবুজ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন বকুলকে জানান। পরে জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
৩ লাখ টাকা দিতে গেলে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা টাকা নেয়নি। ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, আরও লোকজন আছে, টাকার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে।
এনিয়ে বিপাকে পড়ে সবুজ লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলালকে বিষয়টি জানানো হয়।
এছাড়াও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছেও জেলা নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে চাহিদা মতো টাকা দাবি করে এখনো না পেয়ে শ্রমিকদের থেকে খুঁটি প্রতি ১০০ টাকা হারে জোরপূর্বক নিয়ে যাচ্ছে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারীরা।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয় থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে সাহাপুর এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই খুঁটিগুলো কর্মস্থলে নেওয়ার সময় শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল করিম নিশান বলেন, আমি সবুজ নামে কাউকে চিনি না। কে বা কারা চাঁদা চেয়েছে আমরা জানি না। চাঁদা দাবির ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, চাঁদা দাবির ঘটনাটি দুঃখজনক। ৩ লাখ টাকা দিতে বললেও ছাত্রলীগ নেতারা আরও বেশি দাবি করছে। বিষয়টি দলের সিনিয়র নেতারাও জেনেছেন।
এদিকে এরআগেও জেলা ছাত্রলীগের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকায় চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের কমিটি বিক্রির অভিযোগ উঠে।
নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর