করোনা নিয়ে লুকোচুরি, নোয়াখালীতে ব্যাপক বিস্তারের আশঙ্কা

প্রকাশঃ

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে ও আক্রান্ত হবার পরও বিষয়টি গোপন করছেন ভুক্তভোগী ও তার স্বজনরা।

কিংবা মারন এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী স্থানীয় প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলেও তথ্য গোপন করছেন ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এমন অভিযোগ উঠেছে, নোয়াখালীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও কয়েক ব্যাক্তি এবং তাদের স্বজনদের বিরুদ্ধে। রোববার পর্যন্ত জেলায় করোনায় ৬ জন আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়াও চৌমুহনী বাজারের দোকানের এক কর্কমচারীর মৃতু্ হয়। তবে তাকে গোপনে তার নিজ এলাকা লাকসামে দাহ করার কারনে করোনা শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তার সঙ্গে কাজ করা, দুই সহকর্মী সহোদর করোনা পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীর রয়েছেন।

ফলে এ জেলায় প্রাণঘাতি এ ভাইরাসের ব্যাপক বিস্তারের আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ ব্যপারে আরও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আরও তৎপরতা প্রয়োজন।

চিকিৎসকরা বলছেন, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে গোপন না করে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। করেনায় আক্রান্ত হলেই মৃত্যু নয়, সঠিকভাবে চিকিৎসা নিয়ম মেনে চললে বাঁচা সম্ভব। প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত যেমন হচ্ছেন, সুস্থও হচ্ছেন। রোববার পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৮ লাখের বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি জেলার বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনী বাজারের কালিতলা রোডের এক দোকানের কর্মচারী (৪৫) করোনার উপসর্গ দেখা দিলে গোপন করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থা গুরুতর হলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।

সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতিতে তাকে ২১ এপ্রিল ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। পরে তথ্য গোপন করে তড়িঘড়ি তার নিজ এলাকা কুমিল্লার লাকসামে সৎকার করা হয়। তবে তার নমুনা সংগ্রহ না করায় ও গোপনে দাহ করার কারনে করোনার টেষ্ট করা যায়নি।

করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ওই ব্যাক্তির সহকর্মীর সংস্পর্শে ছিলেন অপর দুই কর্মচারী। তারা সর্ম্পকে আপন দুই ভাই। ওই দুই ভাইয়ের নমুনা সংগ্রহ করে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পরে তাদের করোনা পজিটিভ আসে। বর্তমানে তাদের বাড়ি লকডাউন।

এদিকে, তথ্য গোপন করে দোকান কর্মচারীর দাফনের ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। শুধু দোকান মালিককে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়। এতে করে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

করোনার সংক্রমণ এড়াতে নোয়াখালীতে লকডাউন চলছে। এর মধ্যে চৌমুহনী বাজারের কালিতলা রোড ও আশপাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন শত শত পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটছে। যা খুবই আতঙ্কের।

গত ১৩ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোরশেদ আলম নামে এক ইতালি প্রবাসীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি জেলা শহরের প্রাইম হসপিটালে চিকিৎসা নেন। আর এ তথ্য গোপন করে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মৃত ব্যাক্তি এবং তার স্বজনরা।

পরে তথ্য গোপন করায় ওই হাসপাতালকে ১৪ দিনের জন্য লকডাউন, একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি খালি করে জীবানুমুক্তকরন এবং সকল চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে নির্দেশনা দিলেও তা আবার সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করে নেয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এমনকি, ১৩ তারিখ লকডাউন ঘোষণা করা হলেও ১৪ তারিখেও প্রতিষ্ঠানটি খোলা দেখা গেছে।

অপরদিকে করোনায় মৃত্যু হওয়া ওই প্রবাসীর ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীও বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ১৫ এপ্রিল ওই প্রবাসীর স্ত্রীর করোনা পজিটিভের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিনা পাল।

এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক উৎকন্ঠায় রয়েছেন নোয়াখালীবাসী। দ্রুত জনসচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়াও প্রশাসনকে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে করোনা তথ্য গোপনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রত্যাশা করছেন জেলার সচেতন মহল।

নিজস্ব প্রতিবেদক/প্রবাস সময়

সর্বশেষ খবর

সৌদিতে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

0
  সৌদি আরবে কাজ করার সময় ভবনের ৩য় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইউছুপ (২৬) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহম্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ...

জনপ্রিয় খবর