নিজস্ব প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারনে বিপর্যস্ত দেশের জনজীবন। এখন পর্যন্ত এ প্রাণঘাতিতে লক্ষ্মীপুরের ৪৩ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। লকডাউনে জেলার অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
চরম ব্যস্ততায় রয়েছেন জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এতে বাদ যাননি স্বাস্থ্য বিভাগও। করোনা উপর্সগ থাকা ব্যাক্তিদের নমুনা সংগ্রহ, তা চট্রগ্রামে করোনা টেষ্ট ল্যাবে প্রেরণসহ আক্রান্তদের চিকিৎসা, কোয়ারেন্টাইন; সব মিলিয়ে মহাব্যবস্ততা জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের।
লকডাউনের এ সময়ে চিকিৎসক-নার্স সঙ্কটে বিপাকে রয়েছেন প্রসূতী মা ও সাধারন রোগীরা। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক-নার্স ও যানবাহন নিয়ে রয়েছে অনিশ্চিয়তা। এ অবস্থায় মানবতার সেবক হয়ে এগিয়ে এসেছেন লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন মো. আবদুল গফ্ফার।
৩০ এপ্রিল দিবাগত রাত ১টা ১৫মিনিট। জেলায় রায়পুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে একজন প্রসূতি মায়ের জরুরী অপারেশন প্রয়োজন।
বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে ফোন করে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন প্রসূতীর স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কোথাও চিকিৎসক না পেয়ে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন সিভিল সার্জন আবদুল গফ্ফারের সঙ্গে।
এর আধাঘন্টার পরই ওই হাসপাতালে উপস্থিতি হন সিভিল সার্জন গফ্ফার।
করেন ওই প্রসূতীর সফল অপারেশন। প্রসূতী জন্ম দেন ছেলে শিশু সন্তানের। বর্তমানে প্রসূতী ও তার নবজাতক সুস্থ রয়েছেন।
এরআগে চিকিৎসক না থাকায় জেলার চন্দ্রগঞ্জে রোকসানা আক্তার (২৫) নামের এক প্রসূতীর অপারেশন করে প্রাণে বাঁচিয়েছেন সিভিল সার্জন গফ্ফার।
যানবাহন বন্ধ থাকায়, জেলা শহরের ১৫ কিলোমিটার দূরের সদর হাপাতালে নিতে না পেরে ওই প্রসূতীকে চন্দ্রগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা।
তাছাড়াও রোগীর অবস্থা ছিল সঙ্কটাপন্ন। এছাড়াও চিকিৎসকের সঙ্কটে জেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এমন একাধিক অপারেশন করেছেন তিনি।
লকডাউনেও রাখছেন প্রশংসিত অবদান। কারো উপসর্গ দেখা দিলে কিংবা উপর্সগে মৃত্যুর খবর পেয়েই তাৎক্ষনিক নিয়েছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। করোনাভাইরাস যেন না ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য করোনা উপসর্গের খবর পেয়ে বেশ কয়েকটি বাড়ি ও পরিবারকে লকডাউনের আওতায় এনে হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়েছেন।
তাঁর এমন কর্মকান্ডের কারনে লক্ষ্মীপুর জেলাবাসী সিভিল সার্জন মো. আবদুল গফ্ফারকে একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অনেকেই তার প্রশংসা করে তার দীর্ঘায়ু কামনা করছেন।
জেলার বিশিষ্টজনরা বলছেন, করোনা মহামারীর এ দূর্যোগময় মুহুর্তে জেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হয়ে, নানান কর্মব্যস্ততার মধ্যেও তিনি যেভাবে মানুষের পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তা প্রশংসনীয়। চিকিৎসক সমাজের কাছে তিনি দৃষ্টান্ত।
লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন মো. আবদুল গাফ্ফার গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে লকডাউন ও চিকিৎসা সঙ্কটের কারনে প্রসূতীদের চিকিৎসাসেবা ব্যাঘাত ঘটছে।
তিনি নিজে গাইনি বিশেষজ্ঞ হওয়ায়, খবর পেয়ে তিনি চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়াবার চেষ্টা করছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক/প্রবাস সময়