লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন আব্দুল গাফ্ফার করোনায় আক্রান্ত, ২২জুন রাত ৯টায় গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন।
এনিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরদিন ২৩ জুন বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এএইচএম ফারুক তার ফেসবুকে পোষ্টে দাবি করেন- সিভিল সার্জন করোনা নয়, ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
এ ঘটনায় জেলার মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে সিভিল সার্জন আব্দুল গাফ্ফার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না নিয়ে ঢাকার ব্যায়বহুল আনোয়ার খাঁন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের সেবা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা বাসিন্দারা।
ভুক্তভোগী ও বিভিন্ন সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতিতে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রমের অধিকাংশ ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। কাগজে কলমে বিভিন্ন প্রদক্ষেপের কথা ‘সিভিল সার্জন লক্ষ্মীপুর’ নামের ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়া হলেও পরিস্থিতি ভিন্ন।
জেলার সদর হাসপাতালে চালু করা করোনা ইউনিটের কক্ষে কুকুরের উৎপাত ও চিকিৎসায় অবহেলা চরমে। চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও চিকিৎসা না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ইউনিট কক্ষের রোগীদেরও।
এছাড়াও বাড়িতে অবস্থান করা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় তদারকী নেই স্বাস্থ্য বিভাগের।
করোনা পরিস্থিতির শুরুতে করোনা সংক্রমণরোধে জেলার সিভিল সার্জন কিছু প্রদক্ষেপ নিলেও পরবর্তীতে তা থমকে যায়।
গত দেড়মাস থেকেই করোনা পরিস্থিতিতে নীরবতা পালন করছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ।
এরই মধ্যে ২২জুন রাতে লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফ্ফার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সদর হাসপাতালের আরএমও আনোয়ার হোসেন।
তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত সিভিল সার্জনকে ঢাকার আনোয়ার খাঁন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশের পর, জেলার বাসিন্দারা সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক মন্তব্য করেন।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না নিয়ে কেন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, এনিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরে ২৩ জুন বিকেলে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এএইচএম ফারুক তার ফেসবুক ও সিভিল সার্জন লক্ষ্মীপুর নামে ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করেন জানান, সিভিল সার্জন করোনা নয়, ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের একজন আরএমও বলেছেন, সিভিল সার্জন করোনায় আক্রান্ত। অন্যদিকে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা বলছেন, করোনা নয়, ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
তাদের এমন বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যে জেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এনিয়ে সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, “নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে কেন সিভিল সার্জন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না নিয়ে ব্যায়বহুল বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তার নিজেরই যেখানে আস্থা নেই জেলার স্বাস্থ্য সেবায়, সেখানে কিভাবে সাধারণ জনগণ আস্থা রাখবেন। সিভিল সার্জনকে নিয়ে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ‘নাটক’ করছেন।”
এদিকে দু’জনের দুই রকম বক্তব্যে বিষয়ে জানতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও আনোয়ার হোসেন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এএইচএম ফারুকের মুঠোফোনে কল করলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।
নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর