এক ঘাটে দৈনিক আড়াই কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি!

প্রকাশঃ

লক্ষ্মীপুর: উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের চারটি উপজেলা ঘিরে রেখেছে মেঘনা নদী। এ নদীকে ঘিরে ছোট বড় প্রায় ৩০ টি মাছঘাট রয়েছে।

এরমধ্যে সবচেয়ে বড় মাছঘাট জেলার রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের টাংকি মাছ ঘাট। এ ঘাটে গত মাসে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়।  সে অনুপাতে প্রতিদিন গড়ে এ টাংকি বাজার ইলিশাঘাটে আড়াই কোটি টাকার মৎস্য বাণিজ্য হয় ।

টাংকি মাছঘাট সূত্র জানায়, টাংকি মাছঘাটে সবাই পাইকারি ব্যবসায়ী। জেলেদের মাছ ঘাটে ডাকে উঠানোর পর পাইকারি ব্যবসায়ীরা তা কিনে নেয়।

পরে পোন হিসেবে (৮০টি এক পোন) ইলিশ বিক্রি করা হয় বিভিন্ন জেলার ব্যবাসায়ীদের কাছে। এরমধ্যে ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ৮০ টি ইলিশ ৫০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। মাঝে মধ্যে এ পরিমাণ ওজনের ইলিশ ৭০-৮০ হাজার টাকাও বিক্রি করা হয়। আবার ১ লাখ টাকার ওপরেই একই পরিমাণ ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়ে থাকে।

ছোট ইলিশগুলোও পোন হিসেবে বিক্রি করা হয়। তবে ২০ হাজার টাকার নিচে দাম পড়ে ছোট ইলিশের। সবমিলিয়ে প্রতি মাসে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয় টাংকি মাছঘাটে। গত কয়েক সপ্তাহ থেকে এ ঘাটে উৎসবমূখর পরিবেশে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।

জানা গেছে, কোন এক সময় দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজের টাংকি এসে মেঘনার চরে আটকা পড়ে। সেই থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের ওই এলাকাটি টাংকি বাজার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে এলাকাটির বিস্তির্ণ অঞ্চল মেঘনা নদীতে তলিয়ে গেছে।

ভাঙন কবলিত এলাকাটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ইলিশের ঘাট হিসেবেও পরিচিত। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা এই ঘাটে ইলিশ কিনতে আসছে। এ ঘাটের ইলিশ দেশের প্রায় ২০ জেলায় বিক্রি হয়। এছাড়াও একই উপজেলার আলেকজান্ডার ও রামগতিরহাটেও প্রচুর ইলিশ বিক্রি হয়।

মাছঘাটের কর্মচারী বাবলু জানান, গেল সপ্তাহে এক পোন (৮০টি) ইলিশের দাম ৮০ হাজার টাকা উঠেছে। টাংকি মাছঘাট থেকে বঙ্গপোসাগর খুব কাছেই। এজন্য মেঘনার এ অঞ্চলে বেশি ইলিশ পাওয়া যায়

এবার ইলিশের সাইজ ভাল। তবে এখনো গতবছরের তুলনায় কম ইলিশ উঠছে। মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ও অক্টোবরের ২২ দিন মাছঘাটটি বন্ধ থাকে বাকি দিনগুলোতে জমজমাট ইলিশের হাট থাকে টাংকি মাছঘাট।

টাংকি বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুর রব বেপারী জানান, ইলিশের ভরা মৌসুমে প্রতি মাসে এ ঘাটে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়। এরমধ্যে প্রতিদিন আড়াই কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়। মাঝেমধ্যে ১০ কোটি টাকার ইলিশও বিক্রি হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে রামগতির চরগাজী ইউনিয়ন ও নোয়খালীর হাতিয়া উপজেলার হরণি ইউনিয়ন নিয়ে সীমানা বিরোধ চলছে। ওই ইউনিয়নের ৯০ভাগের বেশি ভোটার লক্ষ্মীপুরের।

সীমানা বিরোধ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তবে ওই এলাকার বাসিন্দারা নিজেদেরকে রামগতির বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। সীমানা বিরোধের কারণে টাংকি মাছ ঘাটটিতে সরকারি ইজারা বন্ধ রয়েছে বলে জানা যায়।

ঘাটের বিস্তির্ণ এলাকা, বেড়িবাঁধ মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। অব্যাহত ভাঙনে যে কোন সময় ঘাটটি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

এদিকে জেলার কয়েকটি ঘাট এলাকার মেঘনা নদীতে এবার নিষিদ্ধ সময়ে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ও অক্টোবরের ২২ দিন ইলিশ নিধন করা হয়।

এর ফলে মা ইলিশ ও জাটকা ইলিশ নিধন হওয়ায় এবার কয়েকটি ঘাটে এখন ভরা মৌসুমে ঝাঁকের ইলিশের দেখা মিলছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর

সর্বশেষ খবর

সৌদিতে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

0
  সৌদি আরবে কাজ করার সময় ভবনের ৩য় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইউছুপ (২৬) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহম্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ...

জনপ্রিয় খবর