লক্ষ্মীপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ফাঁদে পেলে স্বর্নালংকারসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ফরিদ নামে এক বখাটের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কড়ইতলা এলাকায়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসীর স্ত্রী বিউটি আক্তার বলছেন, ‘ফরিদ প্রতারণার মাধ্যমে কোর্ট এফিডেভিটে তার স্বাক্ষর নিয়ে প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিয়েছে। একইভাবে স্বাক্ষর নিয়ে তার অমতে ফরিদ তাকে বিয়ে করেছে।’
বিউটি সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ গ্রামের ইব্রাহিমের মেয়ে ও প্রবাসী নজির আহমেদের স্ত্রী। বখাটে ফরিদ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার করইতলা এলাকার মৃত মমিন উল্যাহর ছেলে।
ভূক্তভুক্তি ও স্থানীয়রা জানায়, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার করইতলা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে প্রবাসী নজির আহমেদের সঙ্গে বিউটি আক্তারের বিয়ে হয়। নজির বর্তমানে প্রবাসী। নজিরের বাবা-মা মারা যাওয়ায় তার ঘরে একাই থাকতেন স্ত্রী বিউটি।
এ সুযোগে এলাকার বখাটে ফরিদ প্রবাসী নজিরের স্ত্রী বিউটিকে নানাভাবে উত্যাক্ত করে। একপর্যায়ে গত ২০ নভেম্বর ফরিদ তাকে প্রতারণার ফাঁদে পেলে লক্ষ্মীপুর আদালতে কোর্ট এফিডেভিটের মাধ্যমে প্রবাসী স্বামী নজিরকে তালাক দেয়ায়। একইভাবে প্রতারণার ফাঁদে পেলে বিউটিকে সাজানো বিয়ে করে তার প্রবাসী স্বামীর স্বর্নালংকারসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল হাতিয়ে নেয় ফরিদ।
এ ব্যাপারে বিউটি আক্তার বলেন, ‘ফরিদ ও তার বোন রোকেয়া আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাকে অন্য কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে কোর্ট এফিডেভিটে তালাক ও কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি তাকে স্ব-ইচ্ছায় বিয়ে করিনি। বিভিন্ন সময় আমাকে ফাঁদে পেলে নজিরের দেওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার ফরিদ হাতিয়ে নিয়েছে।’
ফরিদের মা নুরজাহান বেগম জানান, তার ছেলে বিউটিকে বিয়ে করেছে, তা তিনি আগে জানতেন না। ছেলের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গেলে বিউটি তাদেরকে ঘটনাটি জানায়। তবে তার ছেলে বিউটির কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টের এডভোকেট রাসেল মাহমুদ মান্না জানান, কোর্ট এফিডেভিট হলফনামা মাত্র। শুধু হলফনামা করে তালাক বা বিয়ে সম্পন্ন বা বৈধতা পায়না। বিয়ে বা তালাক একমাত্র বৈধ নিকাহ্ রেজিষ্টারের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসন শাহি বলেন, ফরিদের সঙ্গে বিউটির বিয়ের ঘটনাটি আগে জানতাম না। ব্যক্তিগতভাবে ফরিদও খারাপ ছেলে। ফরিদ সম্প্রতি এক মহিলা কাউন্সিলরকে মারধর করেছে। তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রিয়াজুল কবির সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিজস্ব প্রতিনিধি/লক্ষ্মীপুর/এমআর