নিজস্ব প্রতিনিধি: সৌদি আরবে দূতাবাসের খাদ্য সহায়তা নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আবেদন করে দূতাবাসের খাদ্য সহায়তা না পেয়ে, এটাকে নামে মাত্র ও লোক দেখানো বলে মন্তব্য করেছেন বেশ কয়েকজন প্রবাসী।
তবে, প্রবাসী বিশিষ্টজনরা বলছেন, করোনাভাইরাস সঙ্কটের এ সময়ে দূতাবাসের দেওয়া খাদ্য সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। দ্রুত এ সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন। সেই সাথে প্রবাসী বিত্তশালীদেরকেও সঙ্কটে থাকা প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।
রাষ্ট্রদূত বলছেন, খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চলমান। যারাই আবেদন করবেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে সহায়তা প্রদান করা হবে।
জানা গেছে, ১৩ মার্চ থেকে দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে সৌদি সরকার। এরপর থেকে অধিকাংশ প্রবাসী বাংলাদেশি বেকার হয়ে পড়েন। বিশেষ করে টেক্সিচালক, নির্মাণ শ্রমিককরা কর্মহীন হয়ে আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন।
সরকারকারি হিসেবমতে, দেশটিতে ১০ লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন। তবে বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা আরও বেশি।
করোনার সঙ্কটে, প্রবাসীদের অবস্থা বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা মতে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম শুরু করে দূতাবাস।
সেজন্য গত ৬ এপ্রিল থেকে খাদ্য সঙ্কটে থাকা বাংলাদেশিদের আবেদন আহবান করা হয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৯৬৬৫৬০৩৪৬৭৯৭ হোয়াটসআপ নম্বর ও bdhelpksa@gmail.com ইমেইলে নাম এবং ঠিকানাসহ আবেদন করার জন্য।
এতে ব্যাপক সাড়া মিলে। খাদ্য সঙ্কটে থাকা অসংখ্য বিপদগ্রস্থ প্রবাসী এতে সহায়তার জন্য আবেদন করেন।
১৩ এপ্রিল থেকে প্রবাসীদের মাঝে দূতাবাস ও কনস্যুলেট অফিস ফুড বাস্কেট বিতরণ ও শুরু করে।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার প্রবাসীকে এ সহায়তা প্রদান করা হয়। এরমধ্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে আড়াই হাজার ও জেদ্দা কনস্যুলেটের আওতায় প্রায় দুই হাজার প্রবাসীকে এ সহায়তা দেওয়া হয়।
তবে সৌদি আরবের জেদ্দায় বসবাসকারী মির্জা মাসুদ রানা ও রিয়াদে বসবাসকারী মহসিন, ইকবাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি জানান, তারা দূতাবাসের দেওয়া হোয়াটসআপ নম্বরে আবেদন করেও এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা পাননি।
এব্যপারে যোগাযোগ করা হলেও কোন উত্তর মেলেনি। দূতাবাসের খাদ্য সহায়তা দেওয়া কথা তারা গণমাধ্যমে দেখলেও নিজেরা বা তাদের পরিচিতরা কেউ পাননি।
রিয়াদের বসবাসকারী বাংলাদেশি ব্যাবসায়ী ফারুক হোসেন জানান, দূতাবাসের দেওয়া খাদ্য সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। হাজার হাজার বাংলাদেশি চরম আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন।
দ্রুত দূতাবাসের এ খাদ্য সহায়তা বাড়ানো দরকার। বাংলাদেশি বিভিন্ন কমিউনিটি থেকে কিছু সহায়তা করা হচ্ছে। এটাও আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বিত্তশালী সবাইকে বিপদগ্রস্থ প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।
খাদ্য সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম বিষয়ে রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক তারা সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে অভিবাসী যারা সহায়তার জন্য দূতাবাসে আবেদন করেছেন তাদের পর্যায়ক্রমে সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে। এ সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা যাতে চাকরিচ্যুত না হন, এ বিষয়ে সৌদি আরবের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিনিধি/প্রবাস সময়