মৃত্যুতেও রাজনীতির ‘সুন্দর’ দেখালেন বাবু

প্রকাশঃ

২৮ জুলাই, মঙ্গলবার ভোরে মারা যান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দল সভাপতি শফিউল বারী বাবু।

সাবেক এই ছাত্রদল নেতার অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ।

তার মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমন জাহিদ থেকে শুরু করে মফস্বল ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান অসংখ্য নেতাকর্মী ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক ও সমবেদনা জানান।

বাবু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ১৯৮৬ থেকে ২০২০সাল, রাজনীতিতে প্রায় ৩৪ বছরের পথচলা। ৯০এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে তিনি ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাবে। অসংখ্যবার কারাভোগ করেছেন। তবুও তিনি তার সততা, দেশ প্রেম, নীতি-আদর্শ, দলের প্রতি ভালবাসা থেকে পিছু হটেননি।

২৮ জুলাই, সকালে ঢাকা ও সন্ধ্যায় শফিউল বারী বাবুর নিজ এলাকা লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আবদুল হাদী কলেজ মাঠে জানাজায় মানুষের ঢল নামে। করোনাভাইরাসের এসময়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে, দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও জেলার বিভিন্নস্থান থেকে দলমত নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ তার জানাজায় অংশ নেয়। এসময় হাজারো নেতাকর্মীরা তাকে অশ্রুসিক্ত বিদায় জানান।

ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠা আসা এ রাজনীতিকের অকাল মৃত্যুতে, নিজ দল ছাড়াও সরকার দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ যে ভালবাসা দেখিয়েছেন, এটাই গণতান্ত্রিক দেশের রাজনীতির সৌন্দর্য। অন্যসব সৎ রাজনীতিকের মতো শফিউল বারী বাবুও দেখিয়ে দিলেন রাজনীতির সৌন্দর্য।

রাজনৈতিক নিষ্ঠা, সততা, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের মধ্যে দিয়েই এ ভালবাসা অর্জন করেছিলেন শফিউল বারী বাবু। দেশে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারা একে অন্যের প্রতি প্রকাশ্যে করছেন বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ। তখন তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। তার বাচনভঙ্গি ও শিষ্টাচারে ছিল মুগ্ধতা। তার অকাল মৃত্যু দেশের রাজনীতিতে আরও শূন্যতা বাড়িয়ে দিল।

বেলা শেষে, মানুষ বাঁচে তার কর্মে। সে কর্ম মানুষের হৃদয়ে গ্রথিত থাকে চিরকাল। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার ভাষায়, ‘..এমন জীবন তুমি করিবে গঠন, মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।’

দেশে দুর্নীতিবাজদের মহোৎসব। আর এসব দুর্নীতিবাজদের শক্তির উৎস কিছু সংখ্যক অসৎ নেতা ও জনপ্রতিনিধি। অনেক আগেই, দেশের রাজনীতি দুর্বৃত্তায়নের দখলে গেছে। ভাইরাসের চেয়েও ক্ষিপ্র গতিতে দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে বেড়ে চলছে অসৎ, নীতি-আদর্শচ্যুত রাজনীতিক।

ওইসব নীতি-আদর্শচ্যুত নেতা ও দুর্র্বৃত্তায়নের রাজনীতির ফসল প্রতারক শাহেদ, পাপিয়া, ক্যাসিনো সম্রাট, টেন্ডারবাজ জিকে শামীম, ব্যাংক লুটেরা, বিদেশে অর্থ পাচারচক্র, দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মহোৎসব।

এমন দু:সময়ে, ছাত্র রাজনীতি থেকে বেড়ে উঠা বাবুদের মতো নেতা প্রয়োজন। দলমত নির্বিশেষে সকল নীতি-আদর্শবান সৎ রাজনৈতিকদের দেশের মানুষের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।

সৎ ও দেশপ্রেমী নেতারাই পারেন দুর্নীতিবাজদের রুখে দিতে। সেটার জন্য সবার আগে গণতন্ত্রকে ‘বাক্সবন্দী’ থেকে উম্মুক্ত করা জরুরী। আর রাজনৈতিক দলে, গঠনতন্ত্র মেনে শতভাগ রাজনীতির চর্চা ও সৎ নেতাদের প্রাধান্য দিলেই আলো আসবে রাজনীতিতে।

আবুল কালাম আজাদ,সম্পাদক- প্রবাস সময়

সর্বশেষ খবর

সৌদিতে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

0
  সৌদি আরবে কাজ করার সময় ভবনের ৩য় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইউছুপ (২৬) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহম্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ...

জনপ্রিয় খবর